ভারতে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ডেটা সেন্টার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) হাব স্থাপন করতে যাচ্ছে 'গুগল'!





মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান 'গুগল' সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছে যে, তারা ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপতনমে একটি আধুনিক ও বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ডেটা সেন্টার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) হাব স্থাপন করতে যাচ্ছে। এই উচ্চাভিলাষী প্রকল্পের মাধ্যমে গুগল দক্ষিণ এশিয়ার পাশাপাশি সমগ্র এশিয়ায় তাদের প্রযুক্তিগত উপস্থিতি নিশ্চিত করে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছানোর লক্ষ্য স্থির করেছে।


এই উচ্চ প্রযুক্তির আধুনিক ডেটা সেন্টার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) হাব স্থপনে গুগল পর্যায়ক্রমে মোট প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। যা আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে (২০২৬-২০৩০) এই সুবিশাল প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করছে সংস্থাটি। এদিকে ভারত আশা করে এই বিনিয়োগের মাধ্যমে হাজার হাজার নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং বৈশ্বিকভাবে ডাটা সেন্টার প্রতিযোগিতায় ভারতের নিজস্ব প্রভাব ও সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।


আসলে গুগলের ডাটা সেন্টার স্থাপনে ভারতের বিশাখাপতনম নির্বাচিত হওয়ার পেছনে রয়েছে এর কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থান, সাবমেরিন অপটিক্যাল কেবল সংযোগ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রাপ্তির সহজলভ্যতার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিশেষ করে গুগল ভারতের স্থানীয় প্রযুক্তিবিদ, প্রকৌশলী ও গবেষকদের সমন্বয়ে এবং নিয়োগ দিয়ে এই মেগা প্রজেক্টটি খুব দ্রুত বাস্তবায়ন করতে চায়।


বর্তমানে আধুনিক ডেটা সেন্টার হলো একটি সুরক্ষিত, বিশাল সুবিধা (বিল্ডিং), যেখানে শত শত বা হাজার হাজার কম্পিউটার সার্ভার, নেটওয়ার্কিং সরঞ্জাম (যেমন রাউটার ও সুইচ) থাকে এবং ডেটা সংরক্ষণের ডিভাইসগুলো উচ্চ ক্ষমতা ও কার্যকারিতার সাথে কাজ করে। সহজ কথায় বলা যায়, ডেটা সেন্টার হলো ইন্টারনেট ও আধুনিক প্রযুক্তির মস্তিষ্ক বা হৃদয়।


গুগল এই হাব স্থাপনে ওপেন সোর্স এআই টুলস ও মডেল (যেমন TensorFlow, JAX, ও Kubernetes) ব্যবহার করবে, যাতে ভারতীয় গবেষক ও ডেভেলপাররা সহজে উন্নত এআই সিস্টেম তৈরি ও প্রয়োগ করতে পারেন। বিশ্লেষকদের মতে, এই বিনিয়োগ গুগলের জন্য শুধু ব্যবসায়িক সম্প্রসারণ নয়, বরং মাইক্রোসফট ও চীনের প্রযুক্তি আধিপত্যের সঙ্গে এক দীর্ঘমেয়াদি ও ইতিবাচক প্রতিযোগিতায় নিজেদের অবস্থান শক্ত করার কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে।


সাধারণত একটি বড় আকারের বা মেগা-ডেটা সেন্টার কার্যকরভাবে পরিচালনার জন্য প্রায় ১০০ মেগাওয়াট (MW) থেকে ৩০০ মেগাওয়াট (MW) বা তারও বেশি এনার্জি ব্যবহার করা হয়। যদিও গুগলের পরিকল্পিত ১৫ বিলিয়ন ডলারের এই ডেটা হাবটি আগামী ২০৩০ সালের দিকে পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হলে, এর এনার্জি ব্যবহার প্রাক্কলিতভাবে প্রায় ২০০ থেকে ৪০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।


এই প্রজেক্ট বাস্তবায়নে গুগলের মূল লক্ষ্য হলো ভারতসহ সমগ্র এশিয়ায় উদীয়মান ডাটা সেন্টার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বাজারে তাদের নিজস্ব Gemini, Vertex AI ও Cloud Infrastructure সেবাগুলোর প্রভাব সর্বোচ্চভাবে বৃদ্ধি করা এবং একই সঙ্গে স্থানীয় পর্যায়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণাকে আরও গতিশীল করে তোলা।


Information/sources: DW, Reuters, The Indian Express


Author Bio:
Sherazur Rahman Teacher & Writer,
Bangladesh,
sherazbd@gmail.com

Comments

Popular posts from this blog

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ছাপানো পবিত্র কুরআন মাজীদ!

ইএল ক্যাপ্টেন' এক অবিশ্বাস্য দ্রুত গতির সুপার কম্পিউটার!

প্রাণের খোঁজে শনির চাঁদ টাইটানে নাসার এক বৈপ্লবিক “ড্রাগনফ্লাই” স্পেস মিশন!