সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন ‘কংগ্রেসনাল রিসার্চ সার্ভিস’ (সিআরএস) ৩০ পাতার এক প্রতিবেদনে প্রকাশ করে যে, এই মুহূর্তে পাকিস্তানের অস্ত্র ভান্ডারে কমপক্ষে ১২০ থেকে ১৩০টি কৌশলগত পারমাণবিক ওয়ারহেড সমৃদ্ধ ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। তবে আশাঙ্খাজঙ্ক বিষয় হচ্ছে বর্তমানে পাকিস্তানের হাতে এর চেয়ে অনেক বেশি পারমাণবিক অস্র্শও থাকতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এর প্রমানে প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ সব নথিপত্র পাওয়া যায়নি। আর সত্যি যদি পাকিস্তানের কাছে অজানা সংখ্যক পারমাণবিক অস্ত্র থেকে থাকে, তা হলে সেগুলো কতটা ক্ষমতাশালী এবং এগুলো কার বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে পারে সে বিষয়ে কিছু জানা সম্ভব হয় নি। তবে পাকিস্তানের অস্ত্র সম্ভারে থাকা পারমাণবিক অস্ত্রের বেশির ভাগই ভারতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহর এবং সামরিক স্থাপনার দিকে তাক করা রয়েছে তা এক রকম নিশ্চিত। ভবিষ্যতে যে কোন ধরণের যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে বা ভারতের সামরিক আগ্রাসন কৌশলগত ভাবে প্রতিহত করতে পাকিস্তান তার পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে। যাতে যে কোনও মুহূর্তে ভারতের ওপর আঘাত হানা যায়। আবার পাকিস্তানের দিক থেকে ভবিষ্যতে পারমাণবিক হামলা আসতে পারে ভেবে ভারতও তার পারমাণবিক অস্ত্র ব্যাপক ভাবে বাড়িয়ে চলেছে। এ মুহুর্তে ভারতের অস্ত্র সম্ভারে ৯০-১১০টি বা তার চেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র থাকার সমুহ সম্ভাবনা রয়েছে বলে রিপোর্টে দেখানো হয়।
মুলত উন্নততর উপাদান ও পরমাণু প্রযুক্তি-প্রকৌশল পাওয়ার সুযোগ- সুবিধার জন্য ভারত বহু দিন ধরেই ‘নিউক্লিয়ার সাপ্লায়ার্স গ্রুপ’ (এনএসজি)-এর সদস্য হওয়ার ব্যাপক চেষ্টা করে যাচ্ছে। বর্তমানে এনএসজি-র মোট সদস্য সংখ্যা ৪৮। তবে চিনের মতো কয়েকটি দেশের আপত্তিতে ভারতের এনএসজিতে নতুন সদস্য হওয়া সম্ভব হয়ে ওঠেনি। এছাড়া, এনএসজি-তে ভারতকে রুখতে ‘দাবার বোড়ে’র মতো পাকিস্তানকে এগিয়ে দেয় চিন। চীন যুক্তি দেখায়, ভারতকে এনএসজি-র সদস্য করা হলে পাকিস্তানকেও করা উচিত। না হলে এই উপমহাদেশে শক্তির ভারসাম্য নষ্ট হবে। শান্তি বিঘ্নিত হবে। ওই দু’টি দেশ সম্পর্কে এনএসজি-র দৃষ্টিভঙ্গি নিরপেক্ষ হবে না।
মার্কিন কংগ্রেসের দুই প্রভাবশালী সদস্য পল কের ও মেরি বেথ নিকিতিনের লেখা ৩০ পাতার ওই রিপোর্ট- ‘পাকিস্তানস্ নিউক্লিয়ার ওয়েপন্স্’-এ বলা হয়েছে, ‘‘যে ভাবে পাকিস্তান উত্তরোত্তর তার পারমাণবিক অস্ত্রের মজুত বাড়াচ্ছে, নতুন নতুন ধরনের পারমাণবিক অস্ত্র বানাচ্ছে বা ধাপে ধাপে তাদের আরও উন্নত করে তুলছে, তাতে আন্তর্জাতিক অস্ত্র পর্যবেক্ষকরা যথেষ্টই উদ্বিগ্ন। তাঁরা মনে করছেন, এর ফলে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের পরমাণু যুদ্ধের সম্ভাবনা যথেষ্টই বেড়ে গিয়েছে। আবার পাকিস্তানের দিক থেকে বিপদ আসতে পারে ভেবে ভারতও তার পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যাপক উন্নয়ন ও বৃদ্ধি করে যাচ্ছে।

Comments

Popular posts from this blog

এক লিজেন্ডারী যুদ্ধবিমান এফ-১৪ টমক্যাট ফাইটার জেটঃ

ভারত ও চীনের সীমান্ত উত্তেজনা...

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষার দ্রুত বাস্তবায়ন আর কত দূরে ?