মহাকাশ গবেষণায় দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে মানবজাতি!




মহাকাশ গবেষণায় দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে মানবজাতি!




(প্রথম পর্ব)




বিজ্ঞানীদের গবেষণা অনুযায়ী, আমাদের আকাশগঙ্গা ছায়াপথের আকার বা বিস্তৃতি হতে পারে প্রায় ১ লক্ষ আলোকবর্ষের সমান এবং পার্শ্ববর্তী অ্যান্ড্রোমিডা ছায়াপথের আকার হতে পারে কিনা আনুমানিক ২.২ লক্ষ আলোকবর্ষের সমান। আর বর্তমানে অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি আমাদের পৃথিবী থেকে প্রায় ২.৫ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরত্বে অবস্থান করছে। যদিও বিংশ শতাব্দীর শুরুতে বিজ্ঞানীরা অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সিকে একটি নেবুলা হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। আর যে ভুল ধারণা ভেঙ্গে দেন মার্কিন বিজ্ঞানী এডউইন হাবল।




আসলে মানব জাতির পাঠানো সবচেয়ে দূরবর্তী ভয়েজার-১ মহাকাশযান বিগত ৪৭ বছরে প্রতি সেকেন্ডে ১৭.০৮ কিলোমিটার গতিতে চলতি ২০২৫ সালের এখনো পর্যন্ত মাত্র ২৫.০৪ বিলিয়ন কিলোমিটার যাত্রা পথ অতিক্রম করেছে। আর নাসার পাঠানো ভয়েজার-২ মহাকাশযান চলতি ২০২৫ সালে এটি পৃথিবী থেকে প্রায় ২৩.৭ বিলিয়ন কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। যেখানে বিজ্ঞানীরা এক আলোকবর্ষ সমান ৯.৪৬ ট্রিলিয়ন বা ৯ হাজার ৪৬০ বিলিয়ন কিলোমিটার (প্রায়) হিসেব করে থাকেন। 




মানবজাতি তার সবচেয়ে উন্নত এবং প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১৯২ কিলোমিটার গতির পার্কার সোলার প্রোবের মতো গতির মহাকাশযান নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বাস্তবে আমাদের পার্শ্ববর্তী ৪.২৬ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত প্রক্সিমা সেন্টরি সোলার সিস্টেমে পৌঁছতে হয়ত প্রায় ৬ হাজার ৫৮০ বছর সময় লেগে যাবে। অন্যদিকে প্রতি সেকেন্ডে ১৭.০৮ কিলোমিটার গতিতে চলমান ভয়েজার-১ মহাকাশযানের পক্ষে সেই সোলার সিস্টেমে পৌঁছতে হয়ত আনুমানিক ৭৩ হাজার ৬০০ বছর সময় লেগে যেতে পারে।





তাছাড়া আমরা রাতের আকাশে যে সকল নক্ষত্র আমরা খোলা চোখে দেখতে পাই, তার বেশিরভাগই কিন্তু আমাদের সোলার সিস্টেমের কেন্দ্রে থাকা সূর্য থেকে সর্বোচ্চ প্রায় ৫০০ পারসেক দূরত্বের মধ্যে অবস্থান করছে। আর এর বাহিরে কোন নক্ষত্র আমাদের খোলা চোখে দেখার সুযোগ নেই। যেখানে ১ পারসেক সমান ৩.২৬ আলোকবর্ষ হিসেবে ধরা হয়। এ থেকে বোঝা যায় যে, এই মহাবিশ্ব আসলে ঠিক অতটা সুবিশাল ও সুশৃঙ্খল করে সৃষ্টি করা হয়েছে।




বর্তমানে জোতির্বিজ্ঞানীদের গবেষণা মতে, আমাদের এই সুবিশাল মহাবিশ্বের আকার হতে পারে আনুমানিক ৯৩ বিলিয়ন আলোকবর্ষের সমান এবং এখানে মজুত থাকতে পারে আনুমানিক ১০০ বিলিয়ন থেকে প্রায় ২০০ বিলিয়ন ছায়াপথ (নতুন গবেষণায় মহাবিশ্বে ছড়িয়ে থাকা ছায়াপথের সংখ্যা প্রায় ২ ট্রিলিয়ন পর্যন্ত ধারণা করা হয়)। এটি বিজ্ঞানীদের একটি আনুমানিক ধারণা বা বৈজ্ঞানিক প্রেডিকশন হলেও বাস্তবে কসমোলজি রিসার্চের দৃষ্টিতে শেষ বলে কিছুই নেই।




বর্তমানে বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এই মহাবিশ্বের দৃশ্যমান শুধু প্রায় ৫% এক্সপ্লোর করা সম্ভব। আর মহাবিশ্বের অবশিষ্ট (ডার্ক ম্যাটার ও ডার্ক এনার্জি) ৯৫% বিজ্ঞানীদের কাছে একেবারেই অজানা ও রহস্যময় হিসেবে থেকে গেছে। আর এই অতি রহস্যময় ডার্ক ম্যাটার ও ডার্ক এনার্জির অস্তিত্ব নিয়ে গবেষণা করার উদ্দেশ্যে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির (ইএসএ) গত ২০২৩ সালে মহাকাশে প্রেরণ করে উচ্চ প্রযুক্তির এক ইউক্লিড স্পেস টেলিস্কোপ। ইউক্লিড টেলিস্কোপ ইতোমধ্যেই স্ক্যানিং করে ২.৬ মিলিয়ন ছায়াপথের অস্তিত্ব শনাক্ত করেছে।




আর প্রযুক্তির কল্যাণে এবং নিবিড় অধ্যয়নে হয়ত আগামী ২১০০ সালের দিকে বা তার পরবর্তী মহাবিশ্ব সম্পর্কে বর্তমানে সময়ে প্রচলিত ধারণা পরিবর্তন হয়ে নতুন কোন মহাজাগতিক তত্ত্ব ও পরিসংখ্যান বিশ্বের সামনে উন্মোচিত হবে। যেহেতু বিজ্ঞান হচ্ছে একটি ধারাবাহিক এবং চলমান প্রক্রিয়া। তাই মানবজাতি হাজার বছর ব্যাপী টিকে থাকলে এর বিবর্তন, পরিবর্তন, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং চরম মাত্রায় আধুনিকায়ন চলতেই থাকবে। যা ভবিষ্যতে যুগের পর যুগ মানুষের মনে জ্ঞান অন্বেষণে এবং কৌতূহলের নতুন খোরাক জোগাবে।




আর প্রযুক্তির কল্যাণে এবং নিবিড় অধ্যয়নে হয়ত আগামী ২১০০ সালের দিকে বা তার পরবর্তী মহাবিশ্ব সম্পর্কে বর্তমানে সময়ে প্রচলিত ধারণা পরিবর্তন হয়ে নতুন কোন মহাজাগতিক তত্ত্ব ও পরিসংখ্যান বিশ্বের সামনে উন্মোচিত হবে। যেহেতু বিজ্ঞান হচ্ছে একটি ধারাবাহিক এবং চলমান প্রক্রিয়া। তাই মানবজাতি হাজার বছর ব্যাপী টিকে থাকলে এর বিবর্তন, পরিবর্তন, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং চরম মাত্রায় আধুনিকায়ন চলতেই থাকবে। যা ভবিষ্যতে যুগের পর যুগ মানুষের মনে জ্ঞান অন্বেষণে এবং কৌতূহলের নতুন খোরাক জোগাবে।



(মূল লেখার আংশিক অংশ)




Sherazur Rahman

Comments

Popular posts from this blog

ইএল ক্যাপ্টেন' এক অবিশ্বাস্য দ্রুত গতির সুপার কম্পিউটার!

এক লিজেন্ডারী যুদ্ধবিমান এফ-১৪ টমক্যাট ফাইটার জেটঃ

Brain-Computer Interface (BCI) technology: