দক্ষিণ চীন সাগরে আবারো মার্কিন-চীন সামরিক উত্তেজনা এবং পাল্টা-পাল্টি হুমকী!



দক্ষিণ চীন সাগরের সমগ্র অঞ্চলে চিনের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি এবং সামরিক হুমকী মোকাবেলায় মার্কিন নৌ বাহিনীর এশিয়া প্যাসিফিক নেভাল ইউনিট তদের বহরে থাকা অত্যন্ত শক্তিশালী (Arleigh Burke Class) গাইডেড মিসাইল ড্রেসট্রয়ার দক্ষিণ চীন সাগরে বিতর্কিত দ্বীপ সংলগ্ন এলাকায় মোতায়েন করেছে। এর তীব্র প্রতিবাদ স্বরুপ সাম্প্রতিক সময়ে চাইনিজ পিপলস লিবারেশন আর্মির স্ট্যাটিজিক মিসাইল ফোর্সেস ইউনিট চীনের উত্তর পশ্চিম সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলে তাদের কথিত শীপ এণ্ড ক্যারিয়ার কিলার খ্যাত অজানা সংখ্যক মোবাইল লাউঞ্চ বেসড ডিএফ-২৬ এন্টিশীপ ব্যালেস্টিক মিসাইল মোতায়েন সম্পন্ন করে। এদিকে পিএলএ একাডেমি অব মিলিটারি সায়েন্সের ডেপুটি ডিরেক্টর রিয়ার অ্যাডমিরাল লুও ইউয়ান অভিমত প্রকাশ করেন যে, দক্ষিণ সাগরের বিরোধের স্থায়ী নিষ্পত্তির জন্য ভবিষ্যতে আগ্রাসী মার্কিন যে কোন জাহাজ কিম্বা ক্যারিয়ারকে চীনের সামরিক বাহিনী কর্তৃক সরাসরি ধ্বংস বা ডুবিয়ে দেবার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা উচিত।
নিউক্লিকয়ার এন্ড কনভারশনাল ওয়ারহেড সমৃদ্ধ ডিএফ -২৬ ব্যালেস্টিক মিসাইলটি ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো পিএলএ এর স্ট্যাটিজিক মিসাইল ফোর্সেস ইউনিটে অন্তভুক্ত করা হয়। এটিকে গভীর সমুদ্রে থাকা বিশাল আকারের ড্রেসট্রয়ার বা নিউক্লিয়ার পাওয়ারড ক্যারিয়ার ধ্বংস এবং পাশাপাশি স্থলভাগে শত্রু পক্ষের যে কোন সামরিক স্থাপনা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই গুড়িয়ে দেবার জন্য বিশেষভাবে ডিজাইল করা হয়েছে। তবে চীনের সামরিক কর্তৃপক্ষ তাদের ডিএফ-২৬ ব্যালেস্টিক মিসাইলকে সমুদ্রে থাকা শত্রু পক্ষের বড় ধরণের হুমকী মোকাবেলায় এবং মার্কিন ক্যারিয়ার ধ্বংসে এটিকে কার্যকরভাবে ব্যাবহারে বেশী উৎসাহী বলে মনে করা হচ্ছে।
২০ টন ওজনের ডিএফ-২৬ ব্যালেস্টিক মিসাইলের ব্যাস ১.৪ মিটার ও লম্বায় ১৪ মিটার। আর এই ক্যারিয়ার কিলার খ্যাত ডিএফ-২৬ মুলত ইন্টারমিডিয়েট-রেঞ্জ বিশিষ্ট্য ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা। যা দুই ধরনের পারমানবিক ওয়াররহেড এবং ১২০০ থেকে ১৮০০ কেজি পর্যন্ত প্রচলিত ওয়ারহেড এবং এমনকি ম্যানুভারেবল এন্টি-শীপ এবং হাইপারসনিক ওয়ারহেডগুলি বহন করতে সক্ষম। এটি কার্যত একটি তিন স্তর বিশিষ্ট্য সলিড ফুয়েল চালিত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং এর সর্বোচ্চ পাল্লা ৩০০০ থেকে ৪০০০ কিমি পর্যন্ত। তবে চীনের সরকার নিয়ন্ত্রিত একাধিক সামরিক ওয়েব সাইটের তথ্যমতে, ডিএফ-২৬ সর্বোচ্চ ৫০০০ কিমি পর্যন্ত তার লক্ষ্যে পৌঁছতে সক্ষম। অর্থ্যাৎ, এটি ভারত মহাসাগরের ডিয়াগো গার্সিয়া বা এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে থাকা গুয়ামে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে হামলা করতে পারে বলে মনে করা হয়। তাছাড়া উচ্চ মাত্রার গাইডেন্স সিস্টেম হিসেবে এটিতে নিউ আইটি, ম্যাজারিং এন্ড সেলফ গাইডেন্স প্রযুক্তি ইনস্টল করা হয়েছে। তবে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে মার্কিন নেভাল শিপ এন্ড ক্যারিয়ার ভবিষ্যতে চীনের কথিত এই ডিএফ-২৬ আদৌ প্রতিহত করতে সক্ষম হবে কিনা তা নিয়ে কিন্তু এখনো পর্যন্ত যথেষ্ঠ সন্দেহ এবং প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
সিরাজুর রহমান, সহকারী শিক্ষক এবং লেখক, ছোট চৌগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সিংড়া, নাটোর, বাংলাদেশ। sherazbd@gmail.com

Comments

Popular posts from this blog

ইএল ক্যাপ্টেন' এক অবিশ্বাস্য দ্রুত গতির সুপার কম্পিউটার!

এক লিজেন্ডারী যুদ্ধবিমান এফ-১৪ টমক্যাট ফাইটার জেটঃ

Brain-Computer Interface (BCI) technology: