রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইতার তাসের তথ্য মতে, রাশিয়ান বিমান বাহিনী ২০১৭ সালে মোট ৪৩টি নতুন প্রজন্মের জেট ফাইটার, বোম্বার, সামরিক পরিবহন ও প্রশিক্ষন বিমান গ্রহণ করেছে। যার মধ্যে ১৬টি এসইউ-৩৪ বোম্বার/ জেট ফাইটার, ১০টি এসইউ-৩৫এস ফ্ল্যাংকার-ই মাল্টিরোল জেট ফাইটার, ১৭টি এসইউ-৩০এসএম, ৬টি ইয়াক-১৩০ এডভান্স জেট ট্রেইনার, একটি এএন-১৪৮ টার্ন্সপোটার জেট এবং একটি মর্ডানাইজড আইএল-৭৬ স্ট্যাটিজিক সামরিক পরিবহন বিমান অন্যতম। এছাড়া রাশিয়া ২০১২-২০১৭ সালের মধ্যে আনুমানিক ৫০০ এর কাছাকাছি সম্পূর্ণ নতুন জেট ফাইটার, বোম্বার, সামরিক পরিবহন বিমান, হেলিকপ্টার বিমান বাহিনীতে আন্তভুক্ত করতে সক্ষম হয় এবং এ মুহুর্তে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শক্তিশালী বিমান বহর হিসেবে রাশিয়ান বিমান বাহিনীতে ৪০০০ এর কাছাকাছি যুদ্ধবিমান, বোম্বার, সামরিক পরিবহন বিমান এবং হেলিকপ্টার সক্রিয় রয়েছে।
আবার ঠিক একই সময়ে ২০১৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীতে ৫৭টি সুপার এডভান্স মাল্টিরোল জেট ফাইটার, বোম্বারসহ হেভী টার্ন্সোটার জেট অন্তভুক্ত করা হয়। যার মধ্যে জয়েন্ট স্টাইক এফ-৩৫ লাইটিনিং এবং এফ-১৮ সুপার হর্নেট এবংহেভী গ্লোব মাস্টার সামরিক পরিবহন বিমান অন্যতম।
তবে বিশ্বের সামরিক মহলকে অবাক করে দিয়ে বিশ্বের উদিয়মান অর্থনৈতিক ও সামরিক পরাশক্তি চীন ২০১৭ সালে সর্বোচ্চ সংখ্যক ১০০টি নতুন যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার ও সামরিক পরিবহন বিমান এবং অসংখ্য কমব্যাট ও নজরদারি ড্রোন পিপলস লিবারেশন বিমান বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করে। যার মধ্যে রাশিয়া থেকে দ্বিতীয় ব্যাচে ১০টি এসইউ-৩৫এস ফ্ল্যাংকার-ই এবং ৮টি জে-২০ স্টিলথ এয়ার সুপিউরিটি জেট ফাইটার অন্যতম। এছাড়া আর তেমন কোন তথ্য পাওয়া সম্ভব না হলেও চীন তাদের নিজস্ব উৎপাদিত অজানা সংখ্যক জে-১১, ক্যারিয়ার বেসড জে-১৫, সুপার এডভান্স জে-১৬ জেট ফাইটারসহ কিছু সংখ্যক জেড-১০ ও জেড-১৯ এট্যাক হেলিকপ্টার সংযোজন করেছে বলে মনে করা হয়।
তাছাড়া ২০১৭ সালে ভারতীয় বিমান বাহিনীতে উল্লেখযোগ্য কোন যুদ্ধবিমান যংযোজন করা না হলেও ৮টি নিজস্ব উৎপাদিত তেজাস বার্ড লাইট জেট ফাইটার এবং সর্বশেষ গ্লোব মাস্টার সিরিজের হেভী টার্ন্সপোটার বিমান এবং কিছু সংখ্যক কমব্যাট ও সামরিক পরিবহন হেলিকপ্টার সার্ভিসে আনা হয়েছে। তবে ২০১৭ সালে ভারত সরকার বেশ কিছু বৃহং আকারের যুদ্ধবিমান ক্রয় চুক্তি সম্পন্ন করে যার মধ্যে ৮.৭ বিলিয়ন ডলার মূল্যে ফ্রান্স থেকে ৩৬টি ডেস্টাল রাফায়েল ৪++ জেনারেশন জেট ক্রয় চুক্তি অন্যতম এবং ভারত খুব সম্ভবত ২০১৯ সালের দিকে রাফায়েল জেট ফাইটারের প্রথম চালান পেতে যাচ্ছে। এছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২.০০ বিলিয়ন ডলারের ২২টি গার্ডিয়ান নজরদারি ড্রোন ক্রয়ের বিষয়টি এক রকম চুড়াম্ত হবার পথে। আবার ভারত প্রায় ২০.০০ বিলিয়ন ডলার মুল্যের এমআরসিএ প্রজেক্টের আওতায় প্রযুক্তিসহ ১২৬টি সিঙ্গেল ইঞ্জিন জেট ফাইটার মেইক ইন ইন্ডিয়া নীতিতে উৎপাদনে কাজ করে যাচ্ছে। এখানে সুইডিস সাব কোম্পানি গ্রীপেন-ই এবং মার্কিন লর্কহীড কর্পোরেশন এফ-১৬ ব্লক ৭০ অথবা বোয়িং এফ-১৮ সুপার হর্নেট তাদের নিজেদের মধ্যে প্রবল প্রতিদ্বন্দিতা করে যাত্ছে ভারতের আন্তজার্তিক এমআরসিএ টেন্ডার পেতে। তবে বিষয়টি এখনো পর্যন্ত প্রাথমিক ও আলোচনা পর্যায়ে রয়েছে বলে মনে করা হয়। আবার ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয় ৮৩টি এডভান্স লাইট এট্যাক তেজাস মার্ক-১ যুদ্ধবিমান উৎপাদনে ৮.০০ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ ছাড় করেছে।
সিরাজুর রহমান (Sherazur Rahman), সহকারী শিক্ষক ও লেখক, জয়কুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সিংড়া, নাটোর, বাংলাদেশ। sherazbd@gmail.com

Comments

Popular posts from this blog

এক লিজেন্ডারী যুদ্ধবিমান এফ-১৪ টমক্যাট ফাইটার জেটঃ

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষার দ্রুত বাস্তবায়ন আর কত দূরে ?

এবার আমেরিকার এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পেতে যাচ্ছে তুরস্কঃ