এবার ভারতকে কৌশলগত ভাবে প্রতিহত করার জন্য চীন ভারতের সীমান্তের ওপারে অত্যন্ত গোপনে তিব্বতের উচ্চ ভূমিতে তাদের নিজস্ব সামরিক অবস্থান ও শক্তি বাড়াতে কাজ শুরু করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। মুলত ভারত হিমালয়ের কোলে ব্রহ্মস সুপারসনিক ক্রজ মিসাইল এবং লাদাখে শতাধিক ট্যাঙ্ক মোতায়েনের প্রেক্ষিতে চিন বিষয়টিকে নিজ দেশের বিরুদ্ধে ভারতের এক রকম সরাসরি যুদ্ধ প্রস্তুতি বিবেচনা করে ইতোমধ্যেই গভীর অসন্তোষ প্রকাশ করে। আর ভারতকে সর্বোচ্চ হুঁশিয়ারি দেয়ার ঠিক কিছুদিনের ব্যবধানে চীন খুব সম্ভবত তিব্বতের ১৪০০০ ফিট উচ্চতায় দাওচেং ইয়াদিং বিমানবন্দরে স্টিলথ টেকনোলজি সমৃদ্ধ জে-২০ ফাইটার মোতায়েন করে। তবে অবশ্য চীন কি পরিমাণ জে-২০ বিব্বতে মোতায়েন করতে যাচ্ছে সে ব্যাপারে কোন তথ্যই প্রকাশ করেনি। কিন্তু বিশ্বের সর্বোচ্চ উচ্চতায় অবস্থিত দাওচেং ইয়াদিং বিমানবন্দরে টারম্যাকে ত্রিপল দিয়ে ঢাকা অবস্থায় দেখা গেছে জে-২০ কে। আসলে গোয়েন্দা স্যাটালাইট বা অন্য কেউ জে-২০ স্টিলথ ফাইটারের অবস্থান সম্পর্কে কিছু জানতে না পারে, সেজন্য খুব সম্ভবত ক্যামোফ্লাজ ত্রিপল দিয়ে সেটি ঢেকে রাখা হয়েছিল। কিন্তু অবশ্য শেষ পর্যন্ত বিষয়টি আর গোপন রাখা সম্ভব হয়নি। আবার এমনতো হতে পারে চীন তার নিজস্ব জে-২০ কে অতি উচ্চতায় এবং প্রতিকূল ঠান্ডা পরিবেশে এর ফ্লাইট ক্যাপাবিলিটির চুড়ান্ত পরীক্ষা সম্পন্ন করার উদ্দেশ্যে আগেই সেখানে নিয়ে গেছে।
প্রকৃতপক্ষে, স্টিলথ টেকনোলজি সমৃদ্ধ জে-২০ জেট ফাইটার নিয়ে চীন এখনো পর্যন্ত তেমন কোন তথ্য প্রকাশ করেনি এবং চীন এটিকে ইতোমধ্যেই তাদের প্রোডাকশন লাইনে এনেছে কি না বা আবার তাদের বিমান বহরে সংযুক্ত করার বিষয়ে অত্যন্ত গোপনীয়তা অবলম্বন করে যাচ্ছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তিব্বতের দাওচেং ইয়াদিং বিমানবন্দরে জে-২০ অবস্থান প্রকাশে আসার পর আন্তজার্তিক প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক ও বিশেষজ্ঞরা জে-২০ সুপার স্টিলথ জেট ফাইটার পিএলএ এয়ার ফোর্সে সংযুক্ত সুসম্পন্ন করা হয়েছে বলে মত প্রকাশ করছেন।
সিঙ্গেল সিটের স্টিলথ প্রযুক্তি সমৃদ্ধ পঞ্চম প্রজন্মের এডভান্স জে-২০ এয়ার সুপিউরিটি জেট ফাইটারকে অত্যন্ত উচ্চতায় এবং যে কোন প্রতিকুল পরিবেশে দক্ষতার সাথে এয়ার কমব্যাট মিশন পরিচালনা করার উদ্দেশ্যে বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। এছাড়া ভূমিতে অবস্থিত রেডার এবং অন্য প্রতিপক্ষ বিমানের রেডার সিস্টেমকে এড়িয়ে বা ফাঁকি দিয়ে কাজ করার উপযোগী করে তৈরি করা হয়। আবার জে-২০ জেট ফাইটারের প্রটোটাইপ কপিতে টুইন রাশিয়ান সাটার্ন এএল-৩১এফ ইঞ্জিন ব্যবহার করা হলেও প্রডাকশন লাইনে খুব সম্ভবত চীনের নিজস্ব তৈরি টুইন নেক্সড জেনারেশন ডাব্লিউএস-১৫ আফটার টার্বোফ্যান ইঞ্জিন ব্যবহার করা হতে পারে। এছাড়া ২.০-২.২ ম্যাক গতির সুপার স্টিলথ টেকনোলজির জে-২০ এয়ার সুপিউরিটি জেট ফাইটার নতুন প্রজন্মের এইএসএ রেডার সমৃদ্ধ করে তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া এডভান্স জে-২০ এর ওয়েপন-বে তে আনুমানিক ২৫০০-২৮০০ কেজি পর্যন্ত অস্ত্র বহনে সক্ষম। প্রতিটি জে-২০ এর প্রডাকশন কস্ট ১৫০ থেকে ২০০মিলিয়ন ডলার হতে পারে। এছাড়া জে-২০ সমন্ধে তেমন উল্লেখযোগ্য তথ্য পাওয়া সম্ভব নয় বা চীন হয়ত কৌশলগত কারণে তথ্য প্রকাশে সর্বোচ্চ নিরবতা পালন করে যাচ্ছে। তবে এবার দেখার বিষয় বাস্তবে জে-২০ কতটা সক্ষমতা প্রদর্শন করতে পারে।
সিরাজুর রহমান
সহকারী শিক্ষক,
সিংড়া, নাটোর, বাংলাদেশ।
sherazbd@gmail.com

Comments

Popular posts from this blog

এক লিজেন্ডারী যুদ্ধবিমান এফ-১৪ টমক্যাট ফাইটার জেটঃ

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষার দ্রুত বাস্তবায়ন আর কত দূরে ?

এবার আমেরিকার এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পেতে যাচ্ছে তুরস্কঃ