Posts

Showing posts from August, 2025

বিশ্বের প্রথম সফল বাণিজ্যিক পার্সোনাল কম্পিউটার

Image
বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কম্পিউটার প্রযুক্তিতে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন শুরু হয়। বিশেষ করে ১৯৪৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি হয় ‘এনিয়াক’ (ENIAC) কম্পিউটার। যা ছিল বিশ্বের প্রথম সাধারণ ব্যবহারের উদ্দেশ্যের ডিজাইনকৃত ইলেকট্রনিক ডিজিটাল কম্পিউটার সিস্টেম। যদিও ENIAC প্রোগ্রামেবল কম্পিউটার সিস্টেম ছিল, তবে এটি stored-program architecture ব্যবহার করত না। পাশাপাশি ENIAC কম্পিউটার আকারে ছিল অনেক বড় এবং এটি অপারেট করতে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুতের প্রয়োজন হতো এবং এটি সাধারণ মানুষের ব্যবহারের উপযোগী কোনো মাইক্রো পার্সোনাল কম্পিউটার ছিল না। আর প্রযুক্তিগত উন্নয়নের সীমাবদ্ধতার কারণে সাধারণ মানুষের জন্য ছোট আকারের ও ব্যক্তিগত ব্যবহারের উপযোগী মাইক্রো পার্সোনাল কম্পিউটার বাজারে আসতে সময় লাগে আরও প্রায় তিন দশক। অবশেষে ১৯৭৫ সালের জানুয়ারিতে আমেরিকার Popular Electronics ম্যাগাজিনের কাভার পেজে প্রথমবার প্রকাশিত হয় Altair 8800 মডেলের মাইক্রো পার্সোনাল কম্পিউটারের ছবি ও বিবরণ। এর কিছুদিনের মধ্যেই এটি বাজারে চলে আসে। এই কম্পিউটারকে অনেকে ‘প্রথম মাইক্রো পার্সোনাল কম্পিউটার’ বলে থা...

নব্বইয়ের দশকে দক্ষিণ কোরিয়ার অটোনোমাস কার প্রযুক্তির উত্থান ও তার স্বপ্নভঙ্গ!

Image
আজ থেকে প্রায় ৩২ বছর আগে, ১৯৯৩ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার কিয়ংপুক ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক হান মিন-হং ও তাঁর গবেষক দল কয়েক বছরের প্রচেষ্টায় একটি ডেডিকেটেড অটোনোমাস ড্রাইভিং কার ডিজাইন ও তৈরি করেন, যা চালকের সক্রিয় নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই ব্যস্ত সড়কে নিরাপদে চলতে সক্ষম ছিল। পরীক্ষামূলক চালনায় এই স্বয়ংক্রিয় কার সিউল ও আশপাশের মহাসড়ক এবং জনাকীর্ণ রাস্তায় আনুমানিক ৩০০ কিলোমিটার পথ কোনো দুর্ঘটনা ছাড়াই অতিক্রম করে প্রযুক্তি মহলে ব্যাপক সাড়া ফেলে দেয়। উচ্চ প্রযুক্তির এই অটোনোমাস গাড়িটিতে তৎকালীন সময়ে রাডার সেন্সর, ভিডিও ক্যামেরা-ভিত্তিক কম্পিউটার ভিশন সিস্টেম, সীমিত ক্ষমতার জিপিএস নেভিগেশন এবং অনবোর্ড মাইক্রোপ্রসেসর-ভিত্তিক ড্রাইভিং কন্ট্রোল ইউনিট ব্যবহৃত হয়েছিল। এই সিস্টেম রোড লেন শনাক্তকরণ, আশপাশের গাড়ি ও প্রতিবন্ধক সনাক্তকরণ, স্বয়ংক্রিয় গতি নিয়ন্ত্রণ এবং প্রাথমিক পর্যায়ের অবস্ট্যাকল অ্যাভয়ডেন্স সক্ষমতা প্রদান করত। তৎকালীন সময়ের প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার প্রেক্ষাপটে এটি ছিল অত্যন্ত উন্নত ও আধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ একটি স্বয়ংক্রিয়চালিত গাড়ি। এই প্রকল্প নব্বইয়ের দশকে অটোনোমাস অটোমোবাইল প্রয...

রেয়ার আর্থ এলিমেন্ট: আধুনিক প্রযুক্তির এক অপরিহার্য উপাদান!

Image
বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তির এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং অপরিহার্য উপাদান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে রেয়ার আর্থ এলিমেন্টস (Rare Earth Elements) বা রেয়ার আর্থ মেটাল। এই উপাদানের নামের মধ্যে “রেয়ার বা বিরল” কথাটি থাকলেও প্রকৃতপক্ষে পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠে এসব উপাদান তুলনামূলকভাবে যথেষ্ট পরিমাণে পাওয়া যায়। তবে এই উপাদানগুলো প্রকৃতিতে খুব কম ঘনত্বে অন্য খনিজ বা মৌলের সাথে মিশ্রিত অবস্থায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে। যার ফলে সেগুলো আহরণ, উত্তোলন ও পরিশোধন করা প্রযুক্তিগতভাবে যথেষ্ট জটিল এবং ব্যয়বহুল কাজ হয়ে থাকে। বৈজ্ঞানিকভাবে রেয়ার আর্থ এলিমেন্ট বলতে পর্যায় সারণির ল্যান্থানাইড সিরিজের ১৫টি মৌল, এর সাথে স্ক্যান্ডিয়াম ও ইট্রিয়াম মিলিয়ে মোট ১৭টি মৌলকে বোঝানো হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ল্যান্থানাম, সেরিয়াম, প্রাসিওডিমিয়াম, নিওডিমিয়াম, প্রমেথিয়াম, সামারিয়াম, ইউরোপিয়াম, গ্যাডোলিনিয়াম, টার্বিয়াম, ডিসপ্রোসিয়াম, হোলমিয়াম, ইরবিয়াম, থুলিয়াম, ইটারবিয়াম, লুটেশিয়াম, স্ক্যান্ডিয়াম এবং ইট্রিয়াম। বিরল মৃত্তিকা উপাদানের বিশেষ ভৌত ও রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য, যেমন- চৌম্বকত্ব, বৈদ্যুতিক পরিবাহিতা, তাপ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং...

নব্বইয়ের দশকে দক্ষিণ কোরিয়ার অটোনোমাস কার প্রযুক্তির উত্থান ও তার স্বপ্নভঙ্গ!

Image
আজ থেকে প্রায় ৩২ বছর আগে, ১৯৯৩ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার কিয়ংপুক ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক হান মিন-হং ও তাঁর গবেষক দল কয়েক বছরের প্রচেষ্টায় একটি ডেডিকেটেড অটোনোমাস ড্রাইভিং কার ডিজাইন ও তৈরি করেন, যা চালকের সক্রিয় নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই ব্যস্ত সড়কে নিরাপদে চলতে সক্ষম ছিল। পরীক্ষামূলক চালনায় এই স্বয়ংক্রিয় কার সিউল ও আশপাশের মহাসড়ক এবং জনাকীর্ণ রাস্তায় আনুমানিক ৩০০ কিলোমিটার পথ কোনো দুর্ঘটনা ছাড়াই অতিক্রম করে প্রযুক্তি মহলে ব্যাপক সাড়া ফেলে দেয়। উচ্চ প্রযুক্তির এই অটোনোমাস গাড়িটিতে তৎকালীন সময়ে রাডার সেন্সর, ভিডিও ক্যামেরা-ভিত্তিক কম্পিউটার ভিশন সিস্টেম, সীমিত ক্ষমতার জিপিএস নেভিগেশন এবং অনবোর্ড মাইক্রোপ্রসেসর-ভিত্তিক ড্রাইভিং কন্ট্রোল ইউনিট ব্যবহৃত হয়েছিল। এই সিস্টেম রোড লেন শনাক্তকরণ, আশপাশের গাড়ি ও প্রতিবন্ধক সনাক্তকরণ, স্বয়ংক্রিয় গতি নিয়ন্ত্রণ এবং প্রাথমিক পর্যায়ের অবস্ট্যাকল অ্যাভয়ডেন্স সক্ষমতা প্রদান করত। তৎকালীন সময়ের প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার প্রেক্ষাপটে এটি ছিল অত্যন্ত উন্নত ও আধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ একটি স্বয়ংক্রিয়চালিত গাড়ি। এই প্রকল্প নব্বইয়ের দশকে অটোনোমাস অটোমোব...

আধুনিক প্রযুক্তির এক অপরিহার্য উপাদান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে রেয়ার আর্থ মেটাল!

Image
লেখক: সিরাজুর রহমান প্রকৃতিতে প্রাপ্ত রেয়ার আর্থ মেটাল বা উপাদান হচ্ছে, এমন কিছু একাধিক খনিজ বা মৌল যা বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তি ও উৎপাদন শিল্পে অবিচ্ছেদ্য এবং গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এই মৌলগুলোকে "rare" বা দুর্লভ বলা হলেও, প্রকৃতপক্ষে এই উপাদানগুলো পৃথিবীর ভূ-পৃষ্ঠে মোটামুটি পরিমাণে মজুত রয়েছে। তবে এগুলো সাধারণত একাধিক অন্য খনিজ বা মৌলের সাথে মিশ্রিত অবস্থায় ছড়িয়ে থাকে। প্রকৃতিতে এটা বিশুদ্ধভাবে পাওয়া কঠিন হওয়ায় এর উত্তোলন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ অনেকটাই ব্যয়বহুল ও জটিল হয়ে থাকে। বিজ্ঞানের ভাষায় রেয়ার আর্থ মেটাল বা বিরল মৃত্তিকা উপাদান বলতে মূলত পর্যায় সারণির ল্যান্থানাইড সিরিজভুক্ত ১৫টি মৌল এবং স্ক্যান্ডিয়াম (Scandium) ও ইট্রিয়াম (Yttrium) নামের অতিরিক্ত ২টি মৌলকে বোঝায়। অর্থাৎ প্রকৃতিতে প্রাপ্ত মোট ১৭টি মৌলকে একত্রে রেয়ার আর্থ ম্যাটারিয়াল বা এলিমেন্টস বলা হয়। এদের মধ্যে রয়েছে ল্যান্থানাম (Lanthanum), সেরিয়াম (Cerium), প্রাসিওডিমিয়াম (Praseodymium), নিওডিমিয়াম (Neodymium), প্রমেথিয়াম (Promethium), সামারিয়াম (Samarium), ইউরোপিয়াম (Europium...